রাতে কি খেলে ওজন কমে-ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
ব্যায়াম এমন একটি শরীর চর্চা যা আপনার শরীর এবং মনকে সুস্থ রাখে। শরীরের
অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমায়। কিন্তু ব্যায়াম না করার
ফলে আমাদের শরীরে অনেক চর্বি জমে যায়। এই চর্বি ঝরানোর সময়টুকুও আমাদের
নেই।তাই আসুন আমরা জেনে নিই ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। নিচের
পোষ্টটি পড়লে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে যে, ব্যায়াম না করে ওজন কিভাবে কমানো
যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃরাতে কি খেলে ওজন কমে-ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
- ভূমিকা
- লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
- পানি দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
- সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন কমে
- ঘুমিয়ে ওজন কমানোর উপায়
- জিরা পানি কিভাবে খেলে ওজন কমে
- রাতে কি খেলে ওজন কমে
- দ্রুত ওজন কমে কি খেলে
- শেষ কথা
ভূমিকা
শরীরের ওজন বেড়ে গেলে আমরা সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ি। আবার এই ওজন বৃদ্ধি পেলে
বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই ওজন বিভিন্ন কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে।
তাই এই ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এখন বড়দের সাথে সাথে ছোটদেরও ওজন
বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সবাই ভেবে থাকেন এই বাড়তি ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা
আবশ্যক। মানে ব্যায়াম করা ছাড়া কোন উপায় নেই। কিন্তু আমাদের হাতে শরীর
চর্চা করার জন্য কোন সময় নেই।
তাই বলছি ব্যায়াম না করেও ওজন কমানো যায়। আর ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর
গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস রয়েছে যেগুলো অনুসরণ বা প্রয়োগ করলে শরীরের ওজন
হ্রাস পায়। এই আর্টিকেলে এই গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে
আলোচনা করা হবে। তাই এই আর্টিকেল গুরুত্ব সহকারে সম্পূর্ণ পড়তে হবে।
লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
লেবু পানি ওজন কমানোর জন্য একটি কার্যকরী পদ্ধতি। গরমের সময় লেবু পানি আমাদের
কাছে খুবই জনপ্রিয়। এক্ষেত্রে দিনটা শুরু করা যায় লেবু পানি পানের মাধ্যমে।
মধু মেশানো একটু কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে অনেক উপকার
পাওয়া যায়। এটি পানের মাধ্যমে আমাদের শরীরের ফ্যাট অনেকাংশে কমে যায়।
আরও পড়ুনঃমুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়
লেবু পানি এমন সময় পান করতে হবে যেন সেটি খাবার গ্রহন করার অন্তত ৩০ মিনিট আগে
হয়। লেবু পানির সাথে মধু মিশে পান করলে সেক্ষেত্রে ক্ষুধা কম লাগে। সেক্ষেত্রে
আমাদের খাওয়াটাও কমে যায়। এক্ষেত্রে শরীরের ক্যালরি কমে যায় এবং ওজন কমাতে
সাহায্য করে।
পানি দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
জীবন বাঁচাতে পানির কোন বিকল্প নেই। পিপাসা পেলেই আমরা পানি পান করি। সকালে ঘুম
থেকে উঠেই দুই থেকে তিন গ্লাস পানি খেয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে লেবুর রসের সাথে
পানি মিশিয়ে পান করা যায়। সকালে খাওয়ার গ্রহণ করার আগে বেশি করে পানি পান
করতে হবে। এতে ওজন কমানো সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃচুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়
এছাড়াও ওজন কমানোর আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে রাতে বা দুপুরে খাওয়ার আগে বেশি করে
পানি পান করতে হবে। বেশি পানি পান করার ফলে ক্ষুধা কমে যায়। এর ফলে আমরা খাবার
কম খাই। এবং ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণটাও কমে যায়। ফলে শরীরের ওজনটাও কমতে
থাকে। তাই ওজন কমাতে আমাদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন কমে
যদি আমরা সকালে খালি পেটে নিম্নক্ত খাবার গুলো খায় তাহলে ওজন কমাতে সাহায্য
করে। চলুন আমরা সেই খাবার সম্পর্কে জেনে নিই-
- সকাল বেলায় খালি পেটে ডিম খেলে ক্যালরি গ্রহনের মাত্রাটা অনেক কমে যায়। আমাদের শরীরে ফ্যাট কমাতে ডিম সাহায্য করে। ফ্যাট কমার ফলে ওজনও কমতে থাক।
- ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও বাদাম খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সারারাত পানিতে বাদাম ভিজিয়ে সেই বাদাম খেলে অসংখ্য উপকার পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুনঃখালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
- পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ওজন কমানো যায়। পেঁপে সকালের খাবার হিসেবে গ্রহণ করা যায়। শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে পেঁপে সাহায্য করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। সকাল বেলা গরম পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। স্নেহ জাতীয় পদার্থ ঝরিয়ে দিতে গরম পানি বেশ উপকার। এক্ষেত্রে শরীর থেকে ফ্যাট ঝরে যায় এবং হজমেও সাহায্য করে। ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ঘুমিয়ে ওজন কমানোর উপায়
ঘুমোতে যাওয়ার আগে যারা খেতে ভালোবাসে তাদের উচিত গ্রীন টি খাওয়া। গ্রিন টি
পানের মাধ্যমে মেটাবলিজম বাড়ে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। ঘুমানোর আগে রাতে
ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা যেতে পারে। গোসল করার ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি কমাতে
সাহায্য করে। এতে ওজন কমাতে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে।ঘুমোতে যাবার আগে ফোন
ব্যবহার করা আমাদের একটি বড় অভ্যাস।
আমাদের শরীরের যে মেলাটোন হরমোন তৈরি হয় তা মোবাইল, টিভি থেকে নির্গত নীল
রশ্নি বাধা সৃষ্টি করে। আমাদের শরীরের ক্যালরি কমানোর অন্যতম উপাদান মেলাটোনিন।
মেদ ততক্ষণে কমবে না যতক্ষণ আমাদের শরীর ঠিকঠাক মতো ঐ হরমোন না পাই। তাই ঘুমার
আগে এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
জিরা পানি কিভাবে খেলে ওজন কমে
জিরা পানি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ওজন কমাতে জিরা
গুড়ার সাথে কলা খাওয়া যায়। দইয়ের সাথে জিরার গুঁড়া মিশিয়ে নিয়মিত খেলে
ওজন কমে। জিরা খাবার ফলে হজম দ্রুত হয় এবং বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায়। ফলে
ক্যালরি দ্রুত কমে যায়। ওজন কমাতে এই দ্রুত হজম ক্রিয়া সাহায্য করে।চর্বি
কমানোর পাশাপাশি কোলেস্টেরল কমাতেও জিরার ভূমিকা অতুলনীয়। চর্বি কমার ফলে ওজন
কমে যায়। তাই ওজন কমাতে জিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
রাতে কি খেলে ওজন কমে
ওজন কমানোর জন্য সবাই শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কিছু পরিবর্তনই ওজন কমাতে সাহায্য
করে। অনেকেরই ধারণা রাতে না খেলে দ্রুত ওজন কমে। কিন্তু এ ধারণা ভুল। রাতে না
খেলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রাতে ভাতের পরিবর্তে কলাও খেতে পারেন। কলা
খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।কলাতে অনেক বেশি ফাইবার থাকাই এটি অনেকক্ষণ পেট
ভরপুর রাখে। আরও পড়ুনঃআখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে
পেট ভরপুর থাকার ফলে ক্ষুধাও কম থাকে। ফলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনাও কম।
পেশী তৈরি করার জন্য দই খুব কার্যকর। দ্রুত হজমের জন্য রাতে দই খাওয়া ভালো।
ওজন কমানোর জন্য দই কার্যকরী কারণ এতে মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট থাকে যা ওজন কমাতে
সাহায্য করে।
দ্রুত ওজন কমে কি খেলে
অনেকেই মনে করেন বেশি ফলমূল খেলে ওজন বাড়ে। তবে এ ধারণা ভুল।ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর গুরুত্বপূর্ণ টিপস-এর মধ্যে কিছু ফলমূলের তালিকা রয়েছে। যে ফলগুলো খেলে ওজন কমে সেই ফলগুলো সম্পর্কে জানা যাক-
- তরমুজ ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী একটি ফল। তরমুজে বিভিন্ন রকম ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ ,ফাইবার, পটাশিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। ৯২ শতাংশ পানি রয়েছে তরমুজের মধ্যে। তরমুজের মধ্যে পানি ও ফাইবার থাকে যার কারণে আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরপুর থাকে। যার ফলে আমাদের ক্ষুধাটাও কমে যাই। যার ফলে শরীরের ওজনটাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- লিচু এমন একটি ফল যা খেলে ওজন বাড়ে না বরং কমে। আমাদের শরীরে যে টক্সিন আছে তা কমাতে লিচু সাহায্য করে। আর লিচুতে রয়েছে ফাইবার যা টক্সিন কমাতে সাহায্য করে। এতে আমাদের ওজন কম থাকে।
শেষ কথা
পরিশেষে বলি ওজন বেড়ে যাওয়া এখন প্রধান সমস্যা। ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে যারা মা হতে পারছেন না তাদের জন্য ওজন কমানো খুব জরুরী। তাই আমি ব্যায়াম না করে কিভাবে ওজন কমানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে অনেকে উপকৃত হবেন। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর যে কৌশল আলোচনা করেছি তা যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।