দাঁতের পোকা দূর করার ঘরোয়া উপায়-পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
আসসালামু আলাইকুম। আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটি অত্যন্ত পরিচিত একটি
বিষয় সেটি হচ্ছে পোকা দাঁতের ব্যথা। প্রায় মানুষেরই পোকা দাঁত রয়েছে। এর
যন্ত্রণা অনেক কষ্টকর। একবার ব্যথা শুরু হলে মনে হয় আর থামতেই চায় না। ব্যথা
এমন পর্যায়ে চলে যায় তখন আমরা দিশেহারা হয়ে পড়ি।
তখন আমরা ব্যথা কমানোর জন্য বিভিন্ন রকম ওষুধ খুঁজে বেড়ায়। আসলে এই পোকা
দাঁতের ব্যথা হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। কিন্তু পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর
উপায়ও রয়েছে। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেই পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর
উপায় গুলো কি কি আছে সে সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃদাঁতের পোকা দূর করার ঘরোয়া উপায়-পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
ভূমিকা
আসলেই কি দাঁতে পোকা থাকে এ বিষয়ে আমরা কতটুকু জানি। যাকে ডাক্তারি ভাষায়
দাঁতের ক্ষয় বলে, সেটিকে গ্রামাঞ্চলে দাঁতের পোকা বলে থাকি। আসলে পোকা দাঁত
বলতে কিছু নেই। এটি একপ্রকার দাঁতের ক্ষয়। দাঁতের যে ক্ষয় হয় এটার জন্য মূলত
এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া দায়ী। বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে এরকম সমস্যা
হতে পারে। প্রথম দিকে আমরা এই সমস্যাকে খুব ছোট করেই দেখি। তখন আমরা এটাকে কোন
গুরুত্ব দেই না। এক পর্যায়ে এটি বড় আঁকার ধারণ করে। তখন অনেক খরচ করে চিকিৎসা
নিতে হয়। তাই দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিতে হবে। প্রথম থেকে এ বিষয়ে সতর্ক
থাকতে হবে। তাই পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় গুলো জানা থাকলে ঘরোয়া ভাবে এই
ব্যথা অনেকাংশে হ্রাস করতে পারবেন।
দাঁতের পোকা দূর করার ঘরোয়া উপায়
দাঁতে পোকা এই সমস্যাটা প্রায় সবারই রয়েছে। এটি মূলত হয়ে থাকে মিষ্টি জাতীয়
খাবার গ্রহণের ফলে। বেশি পরিমাণ মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণের কারণে দাঁতের
ক্ষয় রোধ বা দাঁতের গর্ত সৃষ্টি হয় যাকে আমরা দাঁতের পোকা বলে থাকি। এই
সমস্যার থেকে সমাধান পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। হিং গরম করে পোকা
দাঁতে ব্যবহার করলে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। মন্সাগাছের শিকড় পোকা
দাঁতে দিলে পোকা আর থাকে না। এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করলে দাঁতের পোকা
দূর হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃদাঁত ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
ছোট থেকে শুরু করে বড় পর্যন্ত সকলেরই দাঁতে পোকা হয়ে থাকে। আর এর যন্ত্রণা যে
কত কষ্টদায়ক তা বুঝতে পারে শুধু সেই ব্যক্তি, যার দাঁতে পোকা আছে। আর এই
সমস্যার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। আর এই ব্যথা কমানোর জন্য কিছু উপায় বা
পদ্ধতি রয়েছে। চলুন দেখে নিই পদ্ধতি গুলো কি।
- প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে নিয়মিত ব্রাশ করা।
- সকল প্রকার মিষ্টি জাতীয় খাদ্যগ্রহণ থেকে বিরত থাকা। মিষ্টি খেলে তৎক্ষণাৎ দাঁত ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে নিন।
- পানির সাথে একটু লবণ দিয়ে হালকা গরম করে নিন। সেই পানি দিয়ে কুলি করলে ব্যথা অনেক কমে যায়।
আরও পড়ুনঃদাঁতের পানের দাগ দূর করার উপায়
- দাঁতের যন্ত্রণা শুরু হলে বরফ সেঁক দিতে পারেন। যাদের ঠান্ডার সমস্যা আছে তারা এটি থেকে বিরত থাকুন।
- পোকা দাঁতে আদা ব্যবহার করলে ব্যথা অনেক কমে যায়। কারণ আদাতে এন্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান।
- পোকা দাঁতের ব্যথা কমাতে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাই দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য উপরের নিয়মগুলো প্রয়োগ করলে এই যন্ত্রণা থেকে
মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
দাঁতের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য আমরা অনেক রকম ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু এই ব্যথা আমরা
ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে দূর করতে পারি। পদ্ধতিগুলো হচ্ছে-
- ঘরোয়াভাবে দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য লবঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য লবণ একটি কার্যকরী উপাদান।
- পেঁয়াজ ব্যবহারেও দাঁতের ব্যথা কমানো সম্ভব। যে দাঁতে ব্যথা হচ্ছে, সেই দাঁতে পেঁয়াজের কোয়া দিয়ে রাখলে ব্যথা থেকে উপশম পাওয়া যায়।।
- পেয়ারা পাতা চিবালে দাঁতের ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃমাথার খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমরা উপরোক্ত আলোচনায় বুঝতে পারলাম, পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য কোন
উপায়গুলো অনুসরণ করতে হবে এবং কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁতের ব্যথা কমানো যায়
সেই সম্পর্কে। তাই এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করলে বা প্রয়োগ করলে অনেক
সুফল পাওয়া যাবে।
দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমরা অনেক খাবার গ্রহণ করার পর ব্রাশ করিনা। বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবার।
দাঁত পরিষ্কার না করার ফলে এই গর্ত সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই গর্ত যাতে সৃষ্টি না
হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন-
- প্রতিদিন নিয়মিত ব্রাশ করা। চকলেট, আঠালো যুক্ত খাদ্য ইত্যাদি খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা।
- খাদ্য গ্রহণের পর কুলি করা উচিত।
আরও পড়ুনঃঘামাচি দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
- খাবার খাওয়া শেষ হয়ে গেলে সুতো বা অন্য কিছুর সাহায্যে দাঁতের ময়লা গুলো বের করে ফেলা উচিত
- ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
এই পদ্ধতি গুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম পদ্ধতি রয়েছে। এই উপায় গুলো বা পদ্ধতি
গুলো সঠিকভাবে মেনে চললে এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে।
দাঁত ব্যথা হলে করণীয়
দাঁত ব্যথা শুরু হলে এই ব্যথা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো
করা একান্ত প্রয়োজন।পানির সাথে একটু লবণ দিয়ে হালকা গরম করে নিন। সেই পানি
দিয়ে কুলি করলে ব্যথা অনেক কমে যায়। দাঁত ব্যথা হলে ঠান্ডা জিনিস খেতে পারেন।
এতে করে ব্যথা অনেকাংশে কমে যায়। দাঁত ব্যথা হলে লবঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন।
লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
দাঁত ব্যথার কারণ
দাঁত ব্যথার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যে কারণগুলো আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকের
জানা নেই। নিচের অংশটুকু পড়লে অবশ্যই বুঝতে পারবেন দাঁত ব্যথা কারণ কি।
- আমরা অনেক সময় দাঁত পিষে থাকি। এই দাঁত পিষার কারণেও দাঁত ব্যথা হয়।
- আক্কেল দাঁত উঠলে দাঁত ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- কোথাও থেকে পড়ে গেলে এবং দাঁতে ব্যথা পেলে দাঁত ব্যথা হয়।
- মাড়িতে কোন সংক্রমণ হয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে দাঁত ব্যথা হয়।
আরও পড়ুনঃঘন ঘন মাথা ব্যাথার কারণ
- অনেক সময় দাঁত নড়তে দেখা যায়। এই দাঁত নড়াচড়ার কারণেও দাঁত ব্যথা হয়।
- শরীরের এমন কিছু অংশ রয়েছে যেগুলো সংক্রমিত হলে দাঁত ব্যথা হতে পারে।
- দাঁতে যদি কোন ফিলিং করা থাকে এবং সেই ফিলিং পড়ে গেলে তাতে দাঁতে ব্যথা অনুভূত হয়।
- জোরে ব্রাশ করার কারণে অনেক সময় দাঁতে আঘাত লাগে। তখন দাঁতে ব্যথা অনুভূত হয়।
তাই দাঁত ব্রাশ করার সময় আমরা সতর্কতার সাথে দাঁত ব্রাশ করব এবং দাঁত ব্যথার
যে কারণ গুলো আলোচনা করা হলো সেগুলো সম্পর্কে সতর্ক হব।
শেষ কথা
অবশেষে দাঁত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই দাঁত থাকতে যদি দাঁতের যত্ন না করতে
পারি তাহলে পরবর্তীতে দাঁত নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে এবং দাঁতের অনেক
সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় গুলো জানার সাথে আরো
যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে চললে দাঁতের অনেক
সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
আশা করি পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। অন্যদেরকে পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার
জন্য দয়া করে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন।
তবে উপরোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে কোন কিছু প্রয়োগ করার আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত।