ভাপা পিঠা বানাতে কী কী লাগে-ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম। আজকের আলোচনা বিষয় হচ্ছে ভাপা পিঠা নিয়ে। শীতকালে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে এই ভাপা পিঠা। কিন্তু অনেকেই জানেনা এই ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম কি। অনেকে আবার ভাপা পিঠা তৈরি করে। কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে কিভাবে ভাপা পিঠা তৈরি করতে হবে সেটি সম্পর্কে অনেকের অজানা।
ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম
তাই যাদের ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম সম্পর্কে ধারণা নেই তাদের জন্য এ আর্টিকেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্টিকেল পড়ে সহজে বুঝতে পারবেন কিভাবে ভাপা পিঠা বানাতে হয় সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম এবং ভাপা পিঠা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃ ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম-ভাপা পিঠা সম্পর্কে ৫ টি বাক্য

ভূমিকা

শীতকাল মানে ভাপা পিঠার কথা মনে পড়ে যাই। সাধারণত শীতকালে এই ভাপা পিঠা তৈরি করা হয়। গ্রামে গঞ্জে এমনকি শহরে ভাপা পিঠার ব্যাপক চাহিদা বেড়ে যায় এই শীতকালে। ভাপা পিঠা খেতে অনেক সুস্বাদু একটি খাবার। শীতকালে গ্রামাঞ্চলে ভাপা পিঠা নাস্তা হিসেবে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। শহরে রাস্তার আশেপাশে ভাপা পিঠা বানাতে দেখা যায়। এই ভাপা পিঠা তৈরি করার সময় এর স্বাদ বৃদ্ধির জন্য সাধারণত গুড় ব্যবহার করা হয়। তবে ভাপা পিঠাতে খেজুরের গুড় দিলে অনেক সুস্বাদু হয় এবং অনেক সুন্দর একটি ঘ্রাণ তৈরি হয়। তবে অনেকে অন্যান্য গুড় দিয়েও তৈরি করে থাকে এই ভাপা পিঠা।

তবে এটি ধুপি নামেও এখনও অনেকে চিনে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ধুপি নামের প্রচলন এখনও রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে ভাপা পিঠার পরিবর্তে ধূপি নামেই পরিচিত বেশি। এই ভাপা পিঠা তৈরি করার কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। তবে সকলে এই ভাপা পিঠা তৈরি করতে পারেনা। এই ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য কিছু উপকরণ প্রয়োজন যেমন আটা, গুড় এবং স্বাদ বৃদ্ধির জন্য নারিকেল ব্যবহার করা যায়। 

আমি মনে করি যাদের ভাপা পিঠা তৈরীর অভিজ্ঞতা নেই তাদের জন্য এ আর্টিকেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। শীতের সকালে কিংবা সন্ধ্যার সময় এই ভাপা পিঠা বেশি খাওয়া হয়। তাই যারা ভাপা পিঠা তৈরি করতে চাচ্ছেন তারা এই আর্টিকেলটি গুরুত্ব সহকারে পড়ুন। এবং ভাপা পিঠা সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

ভাপা পিঠা সম্পর্কে ৫ টি বাক্য

প্রিয় পাঠক এ পর্যায়ে আলোচনা করা হবে ভাপা পিঠা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে। এই ভাপা পিঠার যে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে সে সম্পর্কে অনেকের অজানা রয়েছে। ভাপা পিঠা তৈরির নিয়ম, ভাপা পিঠা বানানোর জন্য কি কি উপকরণ প্রয়োজন এ সম্পর্কে অনেকের অজানা রয়েছে। বিশেষ করে যারা নতুন ভাপা পিঠা তৈরি করতে চাচ্ছেন তাদের কাছে বিষয়টি খুবই নতুন মনে হবে। তবে এই আর্টিকেলটি পড়লে ধারণা পাল্টে যাবে এবং সহজে ভাপা পিঠা তৈরি করতে পারবেন। 
ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য সাধারণত চালের গুঁড়া এর সাথে কিছু প্রয়োজন অনুযায়ী লবণ প্রয়োজন। এই পিঠা সাধারণত জলীয় বাষ্পের আঁচে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। অনেককেই দেখা যায় এটি প্রস্তুত করার সময় গুড় ব্যবহার করে না। কিন্তু এই গুড় ব্যবহার করলে এর স্বাদ অনেক বৃদ্ধি পায়। আরো স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য এর সাথে নারিকেল দিলে খুবই ভালো হয়।

এই ভাপা পিঠা গ্রামে সকালের নাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই ভাপা পিঠা অনেক পুরাতন একটি ঐতিহ্য এবং সুস্বাদু একটি খাবার। শীতকালে এর প্রচলন অনেক বেশি দেখা যায়। শীত মানেই অনেক পিঠাপুলির আয়োজন। শীতকালে অনেক পিঠাপুলি তৈরি করে খাওয়া হয়। সেরকম ভাপা পিঠাও খুবই মজাদার একটি খাবার।

ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম

এবার আমরা জানবো ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম সম্পর্কে। অনেকের মনে প্রশ্ন আসবে যে ভাপা পিঠা বানানো খুবই সহজ একটি ব্যাপার। এই বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই এরকম মনে মনে ভাববে। কিন্তু আসলে সবকিছুই তৈরি করার বা প্রস্তুত করার কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয়। আসলে ভাপা পিঠা একটি পুরাতন ঐতিহ্যবাহী খাবার। ভাপা পিঠা যদি সঠিকভাবে তৈরি করতে না পারি তাহলে তেমন স্বাদ হবে না। তাই সঠিক নিয়মে সঠিক পদ্ধতিতে ভাপা পিঠা তৈরি করলে এটি খেতে অনেক মজা লাগে।

আজকের এই আর্টিকেল পড়ার পর আপনি অতি সহজেই ঘরে বসে ভাপা পিঠা তৈরি করতে পারবেন। ভাবা পিঠা তৈরির জন্য সাধারণত প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়া ,স্বাদ বৃদ্ধির জন্য নারিকেল, গুড়। প্রয়োজন অনুযায়ী লবণ, পানি নিতে হবে। চালের গুঁড়ার সাথে লবণ নিয়ে এবং প্রয়োজন মত পানি নিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর এটির জন্য প্রয়োজন হবে ছোট গোল বাটি, মাটির হাড়ি বা কলস এবং একটি ছোট কাপড়ের টুকরা। 
এই চালের গড়ার মিশ্রণ ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন মিশ্রণটি পানি বেশি হয়ে নরম হয়ে না যায়। তারপর সেই মিশ্রণ ছাকনি দিয়ে বা চালুনি দিয়ে চেলে নিতে হবে। তারপর চালুনির পর সেই মিশ্রণ ছোট গোল বাটিতে নিয়ে তার মধ্যে গুড় এবং নারকেল দিয়ে দিন। কিন্তু যে গোল বাটিতে চালের গুড়া নিবেন সেটির অর্ধেক নিতে হবে। তারপর গুড় দিয়ে বাকি অর্ধেক আবার চালের গুঁড়া দিয়ে পূর্ণ করুন। 

তারপর সেই গোল বাটিটি ছোট কাপড়ের টুকরা দিয়ে ঢেকে মাটির হাড়ির উপর দিয়ে দিতে হবে। তারপর সেই গোল বাটিটি আস্তে করে তুলে নিন। আর লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ভেঙ্গে না যাই। এবার পাঁচ ছয় মিনিট পর আঙ্গুল দিয়ে চেপে দেখে নিন সেটি হয়েছে কিনা। যদি হয়ে যাই তারপর সেটি তুলে নিতে হবে। এভাবে আপনি অতি সহজে ভাপা পিঠা তৈরি করতে পারেন।

ভাপা পিঠা বানানোর পাতিল

শীত আসা মানে ভাপা পিঠার আয়োজন করা। আর এই আয়োজন সম্পূর্ণ করার জন্য কিছু উপকরণ প্রয়োজন। অর্থাৎ চালের গুড়া, গুড়, লবণ, পানি ইত্যাদি প্রয়োজন। এর সাথে আরো প্রয়োজন তৈরির জন্য পাতিল । এই ভাপা পিঠা বানানোর জন্য এক ধরনের পাতিল পাওয়া যায়। সাধারণত গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারে এই পাতিল পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পাতিল তৈরি করা হচ্ছে। শুধু মাটির পাতিল নয় স্টিলের পাতিল তৈরি হচ্ছে এই ভাপা পিঠা তৈরির জন্য।

তাই ভাপা পিঠা বানানোর পাতিল ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। মাটির পাতিল এর ক্ষেত্রে দেখে নিতে হবে সেটি যেন ভাঙ্গা না হয়। যদি ভাঙ্গা হয় বা ফুটো থাকে তাহলে ভিতরের পানি পড়ে যেতে পারে। সুতরাং আপনি জেনে গেলেন ভাপা পিঠা বানানোর পাতিল সম্পর্কে।

ভাপা পিঠা বানাতে কী কী লাগে

আসলে ভাপা পিঠা বানানোর জন্য কি কি উপকরণ প্রয়োজন এটা সম্পর্কে অনেকে ধারণা আছে আবার অনেকের ধারণা নেই। তাই যাদের ধারণা নেই তাদের জন্য এই আলোচনা। আমরা উপরের আলোচনায় জেনেছি ভাপা পিঠা বানাতে কি কি লাগে। এই অংশটি পড়লে সম্পূর্ণ বুঝতে পারবেন ভাপা পিঠার উপকরণ গুলো কি কি। ভাপা পিঠা বানাতে প্রথমত চালের গুঁড়া প্রয়োজন। তারপর আরো প্রয়োজন হয় গুড়। গুড় সাধারণত ব্যবহার করা হয় স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য। আরো স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করা হয় নারিকেল।
ভাপা পিঠার স্বাদ বৃদ্ধি পায় এর সাথে নারিকেল, গুড় ইত্যাদি ব্যবহার করলে। এবং খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। চালের গুড়া, গুড়, নারিকেল ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। এর সাথে আরও প্রয়োজন হয় লবণ, পানি। সর্বশেষে প্রয়োজন হয় একটি গোল বাটি এবং পাতিল। তাহলে এই আলোচনায় বোঝা যাচ্ছে ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য আসলে কি কি প্রয়োজন। আর আমরা জেনে গেলাম ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য কি কি উপকরণ লাগবে এই বিষয়ে।

শীতের পিঠা সম্পর্কে লিখ

শীতের পিঠা সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক কথায় চলে আসে। আসলে শীত মানে অনেক পিঠাপুলির আয়োজন করা। শীতে অনেক পিঠাগুলি তৈরি করা হয় বিধায় এই শীতকাল এগুলো খাওয়ার জন্য খুবই উপযোগী। শীতের বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করা হয়। ভাপা পিঠা থেকে শুরু করে পাটিসাপটা, দুধ পুলি, চিতই ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করা হয় এই শীতে। যেমনঃ বেনি পিঠা, চিতই পিঠা, তেজপাতা পিঠা, চপ পিঠা, ঝুড়ি পিঠা, পায়েস, ক্ষীর, চকলেট পিঠা ইত্যাদি।
শীতকালে পিঠা খেতে খুবই মজা লাগে। যেহেতু শীতকালে অনেক রকমের পিঠা তৈরি করা হয় সেহেতু কোনটির স্বাদ বেশি আর কোনটির স্বাদ কম এই বিষয়ে বলা খুবই মুশকিল। তবে এমন কিছু পিঠা রয়েছে যেগুলোর বিশেষত্ব অনেক বেশি। এই শীতকালে আবার পিঠা উৎসব হয়ে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠান পিঠা উৎসবের আয়োজন করে থাকে।

শীতের পিঠার নাম

আমরা ইতিপূর্বে শীতের পিঠা সম্পর্কে জেনেছি। শীতকালে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করা হয় এবং কি কি পিঠা তৈরি করা হয় সেগুলো সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এই শীতকালে বিভিন্ন ধরনের পিঠা যেমন চিতই পিঠা, ক্ষীর, পায়েস ইত্যাদি তৈরি করা হয়ে থাকে। তাই শীতের পিঠা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য উপরের অংশটি পড়ুন।

শেষ কথা

পরিশেষে, এই আর্টিকেলে ভাপা পিঠা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম কি, ভাপা পিঠা সম্পর্কে যে অজানা তথ্যগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি ভাপা পিঠা সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন। আর জানতে পেরে অবশ্যই উপকৃত হয়েছেন।

তাই অপরকে জানার জন্য এই আর্টিকেলটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিন এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url