ফুচকা বানানোর গোপন রহস্য সম্পর্কে জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম। আজকের বিষয়টা একটু ভিন্ন ধরনের। অর্থাৎ আজকে যে বিষয় নিয়ে
আলোচনা করব সেটি হচ্ছে ফুচকা। এটি এমন একটি মুখরোচক খাবার যেটি খেতে সবাই পছন্দ
করে। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে ফুচকা খেতে পছন্দ করে না। বিষয়টি এমন
যে বাইরে ঘুরতে গেলে ফুচকা খাওয়া চাই।
বিশেষ করে মেয়েদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার। তাই শুধু ফুচকা খেলে
হবে না, এটি কিভাবে বানাতে হয় সেটিও জানা দরকার। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক ফুচকা
বানানোর গোপন রহস্য সম্পর্কে। উপরের বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য শেষ
পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ ফুচকা বানানোর গোপন রহস্য
ভূমিকা
ফুচকা এমন একটি খাবার যার জনপ্রিয়তা ব্যাপক। সাধারণত রাস্তার পাশে ফুচকার দোকান
গুলো অবস্থান করে। যখন আমরা বাইরে ঘোরাঘুরি করি তখন এই দোকানগুলো আমাদের চোখে
পড়ে যায়। আর তখনই ফুচকার কথা মনে পড়ে যায়। বাইরে ঘোরার সময় যদি ফুচকা না
খান, তাহলে আপনার ঘোরাঘুরি অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
আমরা ফুচকা খাওয়ার সময় কখনো কি ভেবেছি, বাড়িতে এই ফুচকা বানানো সম্ভব? কিন্তু
আপনি খুব সহজে এই সুস্বাদু ফুচকা বাড়িতে বানাতে পারেন। তাই এই সুস্বাদু মুখরোচক
খাবারটি কিভাবে বাড়িতে বানাবেন সেই পদ্ধতি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো। তাই
কৌশল গুলো জানার জন্য মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন।
আটা দিয়ে ফুচকা তৈরি
আমরা সবাই ফুচকা খেতে পছন্দ করি, কিন্তু সবাই ফুচকা বানাতে পারিনা। ফুচকা বানানো
তেমন কোন কঠিন কাজ না। কয়েকটি উপায় অনুসরণ করলেই সুস্বাদু ফুচকা তৈরি করা যায়।
তাই ফুচকা বানানোর জন্য প্রথমে আটা নিয়ে নিন এবং এর সাথে কিছু পরিমাণ সুজি দিয়ে
দিন। তারপর এই দুটোকে হালকা গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে মথে নিন। তবে সামান্য পরিমাণ
লবণ দিতে পারেন। তারপর এটি রুটির মতো করে তৈরি করুন এবং ফুচকার মতো ছোট ছোট করে
কেটে নিন। এই কাঁটা ছোট ছোট ফুচকা গুলো গরম তেলে ভেজে নিতে হবে। এটি বাদামি বর্ণ
হয়ে আসলে তুলে নিন। তাহলে আপনার সুস্বাদু ফুচকা তৈরি হয়ে যাবে।
মুচমুচে ফুচকা বানানোর রেসিপি
এখন আলোচনা করা হবে, মুচমুচে ফুচকা বানানোর রেসিপি সম্পর্কে। আমরা সবাই মুচমুচে
গরম জিনিস খেতে পছন্দ করি। মুচমুচে ছাড়া খাওয়া জমে ওঠে না। তাই চলুন জেনে নিই
ফুচকা বানানোর রেসিপি কি। প্রথমে আটা নেওয়ার পর অল্প সুজি যুক্ত করে নিন। এই
দুটি মিশ্রণের সাথে খাবার সোডা দিয়ে দিন। এবং এগুলো একসঙ্গে মিশ্রিত করার জন্য
পানি নিন। এরপর হাত দিয়ে মথে মিশ্রণটি কিছুক্ষণ সময়ের জন্য রেখে দিন। মথে রাখা
আটাটি প্রথমে রুটি করুন এবং এই রুটি থেকে ফুচকার সমান করে কাটতে হবে। ছোট ফুচকা
তেলে ছাড়ার পর বাদামের রং ধারণ করলে তুলে ফেলুন। তাহলে মচমচে ফুচকা হবে।
আরও পড়ুনঃ মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
ফুচকা বানাতে কি কি উপকরণ লাগে
ফুচকা বানাতে আগে উপকরণ দরকার। ফুচকা বানানোর ক্ষেত্রে যে উপকরণগুলো প্রয়োজন,
সেগুলোর কথা এখানে বলা হচ্ছে। অর্থাৎ ফুচকা বানাতে কি লাগবে,আর কি বর্জন করতে হবে
সেগুলো জানতে হবে। এগুলো না জানলে আপনি সুস্বাদু মচমচে ফুচকা তৈরি করতে পারবেন
না। উপকরণ গুলো হচ্ছেঃ
- ১/২ কাপ ময়দা
- ১/২ কাপ সুজি
- বেকিং সোডা
- তেল
- পরিমাণমতো লবণ
- তেতুলের টক
- শুকনো মরিচের গুঁড়া
- শসা
- ডিম সিদ্ধ
- সিদ্ধ আলু
উপরোক্ত উপকরণগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের উপকরণ রয়েছে যেগুলো ফুচকার স্বাদ
বাড়িয়ে দেয়।
ফুচকা খেলে কি হয়
ফুচকা আসলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নাকি উপকার সেটি আগে জানতে হবে। ফুচকা খেলে
যেরকম উপকার হয় তেমনি ক্ষতিও হয়ে থাকে। এর উপকারিতা এবং অপকারিতা দুটোই রয়েছে।
ফুচকা খেলে যে সমস্যাগুলো বা উপকারগুলো হতে পারে সেগুলো হচ্ছে।
উপকার সমূহ নিম্নরূপঃ
- ফুচকা খাবার একটি উপকারিতা হচ্ছে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফুচকাতে তেতুল ব্যবহার করা হয় আর এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। যা হজমে সাহায্য করে।
- ফুচকার সাথে ধনেপাতা দিয়ে থাকে। অন্ত্রের যে কোন সমস্যা সমাধানে এই পাতা খুবই কার্যকরী।
- সর্দি-কাশি উপশমে ফুচকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- ফুচকা ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। কারণ ফুচকাতে লেবু এবং তেঁতুল ব্যবহার করা হয়। যার ফলে শরীরে মেদ জমতে পারে না বা ঝরে যায়।
ফুচকা খেলে যে ক্ষতিগুলো হয়ে থাকেঃ
- ফুচকাতে লবণের পরিমাণটা বেশি থাকায় রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
- ফুচকা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে।
- যাদের একটু কিছু খাওয়াতেই বমি হয়ে থাকে তারা ফুচকা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- আপনি যদি ফুচকা অধিক পরিমাণে খান, তাহলে পেট ব্যথা সহ অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ফুচকা খেলে কি ওজন বাড়ে
অনেকের মনে প্রশ্ন আছে যে, ফুচকা খেলে ওজন বাড়ে কিনা। অনেকে আছে যারা ওজন বেড়ে
যাওয়ার ভয়ে ফুচকা খেতে চান না। তাদের ধারণা ফুচকা খেলে ওজন বেড়ে যাবে। কিন্তু
আসলে সেটা সঠিক ধারণা নয়। সঠিক কথাটা হচ্ছে, ফুচকা খেলে কখনোই ওজন বৃদ্ধি পায়
না। বরং এটি মেদ কমিয়ে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ফুচকা বানানোর গোপন রহস্য
এ পর্যায়ে আমরা শিখে নেব ফুচকা বানানোর যে গোপন রহস্য রয়েছে সে সম্পর্কে। ফুচকা
যে কেউ বানাতে পারেন, কারণ এটি বানাতে খুব বেশি উপকরণ প্রয়োজন নেই। আমরা প্রথমেই
নিয়ে নেব বি আটা। এই আটা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আর এই বি আটা ফুচকা বানানোর
জন্য খুব ভালো।একটা বাটি নিয়ে সেই বাটি করে ৪ বাটি বি আটা নিয়ে নিতে হবে। তারপর
এর সাথে সেই বাটির ১ বাটি ময়দা দিয়ে দিন। এর সাথে আরো সুজি ১/৪ অংশ এবং খাবার
সোডা ১/২ অংশ দিয়ে সব একসাথে নেড়ে নিন। এই উপাদানগুলোর সাথে পরিমাণ মতো পানি
দিয়ে খুব ভালোভাবে মথে নিন।
আরও পড়ুনঃ বেশি কান্না করলে চোখের ক্ষতিসমূহ
তবে লক্ষ্য রাখবেন পানি যেন বেশি না হয়ে যায়। মথা শেষ হয়ে গেলে এটি লম্বা করে
লই করে নিতে হবে। লইটা ছোট ছোট অংশে কেটে নিন। ছোট অংশগুলো বেলে কিছুক্ষণের জন্য
কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। তারপর সেগুলো তুলে নিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে। যখন দেখবেন
বাদামী রং ধারণ করেছে, তখন সেটি তেল থেকে তুলে নিন। তাহলে আপনার মচমচে ফুচকা তৈরি
হয়ে যাবে। তাহলে অবশ্যই জেনে গেছেন ফুচকা বানানোর গোপন রহস্য কি।
বি আটা কি
এই বি আটা সম্পর্কে অনেকের ধারণা আছে আবার অনেকের ধারনা নেই। আটা সম্পর্কে আমাদের
অনেকে ধারণা আছে। সাধারণত গম থেকে আটা হয়। অনেক সময় এই আটা একটু লাল ধরনের হয়ে
থাকে। কারণটা হচ্ছে, গম যখন আমরা মেশিনে দেই, তখন এর সাথে কিছু খোসা চলে যাই। এই
খোসা থাকার কারণে আটার বর্ণটা একটু লালচে রঙের হয়ে যায়।
শেষ কথা
অবশেষ, ফুচকা সকলের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। ফুচকা খাই না, এমন লোক
খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। আশা করি ফুচকা বানানোর গোপন রহস্য কি এবং এই ফুচকার স্বাদ
কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে অবগত হয়েছেন। এবার আপনি নিজেই বাড়িতে মচমচে
ফুচকা বানিয়ে পরিবেশন করুন। আর একটি কথা, যদি আপনার এই পোস্টটি পড়ে একটু উপকার
হয়, তাহলে দয়া করে অন্যের সাথে শেয়ার করুন। তাহলে অন্য ব্যক্তি একটু উপকৃত
হবে। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ