কয়েল কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমরা যে টপিক নিয়ে আলোচনা করব সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
টপিক। টপিকটি হচ্ছে কয়েল নিয়ে। কয়েল একটি অতি পরিচিত নাম এবং এর ব্যবহারও
অনেক। কয়েল সম্পর্কে বলতে গেলে এর উপকারিতা - অপকারিতা, ব্যবহার বিধি ইত্যাদি
বিষয়গুলো চলে আসে।
কোয়েল কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এরকম প্রশ্ন সবাই করে থাকে। এই প্রশ্নের
উত্তর জানতে হলে ধৈর্য সহকারে নিচের পোস্টটি পড়তে হবে। তাই চলুন জেনে নিই -কয়েল
কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? এই প্রশ্নের উত্তর।
পেজ সূচিপত্রঃ কয়েল কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
ভূমিকা
মশার হাত থেকে বাঁচার জন্য সাধারণত আমরা কয়েল ব্যবহার করে থাকি। মশা তাড়াতে
প্রায় সবাই কয়েল ব্যবহার করে থাকে। মশা কামড়ালে আমাদের কি রোগ হয় তার
সম্পর্কে আমাদের জানা আছে কিন্তু কয়েল ব্যবহারের ফলে যে ক্ষতি হয় তা আমরা
অনেকেই জানিনা। কয়েলে যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয় তা আমাদের মানবদেহের জন্য
অনেক ক্ষতিকর। সেই পদার্থ বাতাসে মিশে শরীরের মধ্যে ঢুকে যায় এবং ক্ষতি হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
বিশেষ করে নবজাতক বাচ্চাদের জন্য কোয়েল হুমকি স্বরূপ। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি
কোয়েলের ধোঁয়া, ১০০ টি সিগারেটের সমতুল্য। এমন কি মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা কমে
যায়। এই এই মারাত্মক ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
মশার কয়েল খেলে কি মানুষ মারা যায়
আসলে মশা তাড়াতে আমরা অনেক রকম কয়েল ব্যবহার করে থাকি। বাংলাদেশে অনেক রকম
কয়েল পাওয়া যায়। কয়েল গুলো সহজলভ্য হওয়ায় আমরা মশা তাড়াতে কয়েল ব্যবহার
করে থাকি। এই কয়েল গুলো এতটাই মারাত্মক যে এটা আপনাকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।
এমন কিছু কয়েল আছে যেগুলো শুধু মশা তাড়াতেই সক্ষম না এগুলো তেলাপোকা সহ
অন্যান্য পোকা মারতেও সক্ষম। যেহেতু এটা পোকামাকড় মারতে সক্ষম সেহেতু এটি মানব
দেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে এমন কয়েল আছে যেগুলোতে
বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করাই তা অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ ভাইরাস কিভাবে কম্পিউটারের ক্ষতি করে
সিগারেটের ধোয়া যেমন ফুসফুসের এর ক্ষতি করে, ঠিক তেমনি মশার কয়েলের ধোয়াও
ফুসফুসের ক্ষতি করে থাকে। কয়েল মশা মারার সাথে সাথে মানুষকে অসুস্থ করে ফেলে। এর
কারণে অনেক বড় অসুখ হয়ে যেতে পারে। তাই এই কয়েল ব্যবহার করা থেকে আমাদের বিরত
থাকা উচিত।
মশা খেয়ে ফেললে কি হয়
অনেক সময় মশা আমাদের মুখের মধ্যে ঢুকে যায় এবং গলা পর্যন্ত চলে যায়। তখন আমরা
অনেকেই অস্বস্তি বোধ করি। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মশা
মুখের মধ্যে চলে আসে।অনেকে ভুল করে মশা খেয়ে ফেলে। এখানে প্রশ্ন আসে মশা খেলে
এইডস হবে কিনা। না, মশা খেলে কোন এইডস হবে না। কারণ এই ভাইরাস মশার দেহে থাকে না।
তাই এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বাচ্চারা মশার কয়েল খেলে কি হয়
মশার কয়েল প্রায় সব বাড়িতেই দেখা যায় এই মশার কয়েল আমরা যেখানে সেখানে
ফেলে রাখি। কিন্তু যেখানে সেখানে ফেলে রাখা মোটেই উচিত নয়। কারণ যে বাড়িতে ছোট
বাচ্চা রয়েছে সেই বাড়ির লোকজনদের সতর্ক থাকতে হবে। ছোট বাচ্চারা হাতের কাছে
পেলেই সেটি নিয়ে খেলা শুরু করে।
আবার কখনো কখনো খেয়েও ফেলে।এটা খেলে অনেক ক্ষতি হতে পারে। কারণ এতে রয়েছে
বিষাক্ত নিকোটিন জাতীয় পদার্থ। যা অধিক ক্ষতিকর। তাই এই কয়েল খেয়ে ফেললে
বাচ্চার অসুস্থ হয়ে পড়বে। সবারই উচিত এটি বাচ্চাদের থেকে দূরে রাখা।
বাচ্চারা কয়েল খেয়ে ফেললে করণীয়
ছোট বাচ্চারা তাদের নাগালের মধ্যে যেটি পাবে সেটি নিয়ে খেলা করবে এটাই
স্বাভাবিক। আমরা এমন অনেক জিনিস ফেলে রাখি যেগুলো বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর। তার
মধ্যে একটি হচ্ছে মশার কয়েল। প্রায় আমরা এই জিনিসটা নিচেই ফেলে রাখি। তখন
বাচ্চারা খেলা করতে করতে খেয়ে ফেলে। ছোট বাচ্চারা কয়েল খেয়ে ফেললে অনেক বড়
ধরনের সমস্যা হতে পারে। কারণ এটি বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা তৈরি। কয়েলে নিকোটিন
থাকার কারণে এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যখন বাচ্চারা খেয়ে ফেলবে তখন বাচ্চাদের
বমি করাবেন।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়
কয়েল এর ক্ষতিকর দিক
উপরের আলোচনা পড়ে এতক্ষণ ধারণা হয়ে গেছে যে, কয়েল কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
অথবা ক্ষতিকর কিনা এই প্রশ্নের উত্তর। আমরা যে মশার কয়েল ব্যবহার করি সেই মশার
কয়েলে কি কি ক্ষতি হতে পারে আমরা কি তা জানি। এর অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। মশার
স্প্রেতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মশার কয়েলের
ধোঁয়ায়।
সাধারণত কয়েল আমাদের ঘরের মধ্যেই সারারাত জ্বালিয়ে রাখি এবং আমরা সেই ঘরেই
থাকি। যার ফলে আমাদের নানারকম রোগ হতে পারে। এর ফলে আমাদের হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট,
ফুসফুসের মত অনেক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও কিডনি জনিত সমস্যা হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে। তাই উপরোক্ত ক্ষতিগুলোর কথা বিবেচনা করে কয়েল ব্যবহার না করাই
উচিত।
ভালো মানের মশার কয়েল
আমরা অনেক রকম কয়েল ব্যবহার করে থাকি। মশা হতে যে রোগ হয় তা থেকে বাঁচার জন্য
আমরা এই কয়েল ব্যবহার করে থাকি। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কয়েল পাওয়া যায়। আসলে
ভালো মানের মশার কয়েল কোনটি সেটি সঠিকভাবে বলা মুশকিল। যেমন ঈগল কয়েল, জাম্বো
কয়েল,গুড নাইট মশার কয়েল ইত্যাদি কয়েল গুলো বাজারে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু
বিএসটিআই অনুমোদিত কয়েল রয়েছে। তাই কয়েল ব্যবহার করার আগে ভালো কোয়েল কোনটি
সে বিষয়ে জেনে নিব।
শেষ কথা
অবশেষে, আসলে মশা কে আমরা তুচ্ছ হিসেবে গণ্য করি। কিন্তু এই মশাকে কখনো তুচ্ছ করে
দেখবেন না। এই মশার কামড়ে অনেক ভয়ানক রোগও হতে পারে। এমনকি মানুষের
মৃত্যু(ডেঙ্গু জ্বরে) পর্যন্ত হতে পারে। তার সাথে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। কিন্তু
এই মশা থেকে বাঁচার জন্য আমরা কয়েল ব্যবহার করে থাকি। এই মশা এবং কয়েল দুটোই
হুমকি স্বরূপ। তাই এই দুটো থেকেই বাঁচতে আমাদের বিশেষ সতর্ক হতে হবে।
আশা করি উপরের আলোচনার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন যে, কয়েল কি স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর কিনা। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করে দিন।